একটা ভীষণ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে গেল,
সবীনা আর নীলের প্রেমটা ভেঙ্গে গেল।
পরিযাই পাখি যেমন শীতের শেষে বাংলা ছেড়ে পাড়ি দেয় উত্তরে,
আবার ফিরবে বলে যাত্রা করে, কিন্তু কজন আর ফিরতে পারে!
কতজন ফিরতে পারেনি কোভিড কাটিয়ে,
কতজন পারেনা সীমান্ত থেকে!
হু হু করে মনটা, টন টন করে বুকের বাম পাসটা।
তাও যেন সবীনা আর নীলের প্রেম ভাঙ্গাটার মত দূর্যোগ দেখেনি এ জগত!
এই ভূখণ্ডের গন্ডিটা এক কৃষ্ণগহ্বরের দিকে চলেছে। কৃষ্ণগহ্বরের 'না ফেরা'র রেখাটা যেন এই পেরিয়ে গেলাম, নাকি পার হবো? কে বলতে পারে? আর ফেরার পথ নেই কি? ভেতরটা খালি হয়ে যাচ্ছে , যেন নাগরদোলাটা নামছে মাটির দিকে তীব্র বেগে। বাঁধন হীনতার ভাব জন্মাচ্ছে। কিন্তু এযে জীবনের বাঁধন হীনতা। এই বাঁধন ভেঙ্গে গেলে যে মরণ নিশ্চিত!
মরণে ভয় নেই, ভয় মরণ হলে আশপাশের লোকগুলোর কি হবে!
আচ্ছা কৃষ্ণগহ্বরও তো প্রকৃতি, এযেন প্রকৃতির এক ঝটকায় আবার শুরু করবার বোতাম। একদিক থেকে সব জঞ্জাল ঢুকছে, আরেক দিক থেকে স্বতন্ত্র ভাব নিয়ে নতুন রূপে বের হচ্ছে। ভালোই কারবার! মহাজাগতিক পরিশোধনাগার। তবে সমাজে এমনও পরিশোধনাগার আছে যেখানে পরিশোধন হয়না, আরো আরো কৃষ্ণগহ্বরের অতলে চলে যাওয়া হয়। তবে মুশকিল হল, তারা ঐ অতলে কেউ একা যান না, গোটা সমাজটাকে ঘাড় ধরে নিয়ে ডুবদেন। ধংস হয় গোটা প্রকৃতি। ধংস হয় প্রেম, মনুষ্যত্ব, মানুষ হওয়ার অহং।
তবু এত ধংসের মাঝেও, প্রকৃতি নিজের খেলায় মেতে থাকে। ওকে আটকাবে কে? নস্যি বোঝ নস্যি? প্রকৃতির কাছে এই ব্রহ্মান্ড নস্যি! এক ঝটকায় কোন পথে এসে টুক করে শত শত ভালবাসার বীজ বপণ করে আসবে অগুন্তি সবীনা ও নীলের বুকে।
হয়তো ফুটবে একটা বা দুটো, কিবা একটু বেশি। যারা ফুটবে, তারা গড়ে তুলবে নতুন এক ভালোবাসার প্রজন্ম।
কিন্তু যেসব ফুল ফোটার একদম কাছে এসেও ফুটবেনা, তারা তৈরী করবে নতুন সমাজ। মনুষ্যত্বের সমাজ, ভালোবাসার, ধৈর্যের সমাজ। মানুষে মানুষে ভালোবাসার সহাবস্থানের সমাজ। কারণ তারা দেখেছে ঐ আলোর ঝলক কোন এক বন্ধুর মধ্যে, কোন এক আত্মীয়ের মধ্যে, কোন এক শিক্ষকের মধ্যে, কোন এক প্রেমিকের মধ্যে, বা পথ চলতি কোন এক মূহুর্তের মধ্যে।
Comments